শিগগিরই জিয়ার আত্মহত্যার রহস্যজট খুলছে

ziakবিনোদন ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ জিয়া খানের হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে  যে রহস্যের জট তৈরি হয়েছে তা ইতোমধ্যেই খুলতে শুরু করেছে। তবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী গলায় ফাঁস লেগেই তার মৃত্যু হয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার শরীরের অন্য কোথাও কোনো দাগ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, মুম্বাই পুলিশ জিয়ার চাঞ্চল্যকর এ মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেশকিছু তথ্য আবিষ্কার করতে পেরেছে ।

জিয়ার সর্বশেষ ফোন কল এবং এসএমএস-এর তালিকা নিয়েই তদন্ত কাজ এগিয়ে চলছে। সেই কল লিস্ট থেকে পাওয়া গেছে জিয়া খানের প্রেমিকের সন্ধান। তিনি আর কেউ নন বলিউড অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরাজ পাঞ্চোলি। গত এক বছর ধরে সম্পর্ক চলে আসছিল জিয়া খান ও সুরাজের।

কিন্তু গত দুই মাস ধরে তাদের সম্পর্ক তেমন একটা ভালো যাচ্ছিল না। তার ওপর ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ শঙ্কায় ছিলেন জিয়া। কারণ গত দুই বছরে নতুন কোনো ছবিতে অভিনয় করতে পারেননি তিনি। এসব মিলিয়েই আত্মহত্যার পথ জিয়া বেছে নিয়েছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুরাজের মোবাইল থেকে একাধিক ফোন এসেছে জিয়ার কাছে। অনেক এসএমএস বিনিময় হয়। সোমবার রাত ১০টা ৪৫-এ সর্বশেষ জিয়ার সঙ্গে কথা হয় সুরাজের।

পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী মুম্বইয়ের জুহুর সাগর সংগীত বিল্ডংয়ে রাত ১০টা ৫২ থেকে ১১ টা ২২ এর মধ্যে মৃত্যু হয় জিয়ার।

এদিকে জিয়ার মন ভালো করতে তার বাসায় সেই রাতেই ৮টা ৪৫ এর দিকে একটি ফুলের বুকেটও পাঠিয়েছিলেন সুরাজ। তবে সেই বুকেট ফিরিয়ে দিয়েছেন জিয়া। এর থেকেই ধারণা করা যায় কোনো বিষয়ে সুরাজের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না জিয়ার। তবে সোমবার সারাদিনই এমএমএস আদান-প্রদান হয় জিয়া ও সুরাজের। এর মধ্যে থেকে নিলু নামে এক নারীর নামও উঠে এসেছে। সুরাজকে পাঠানো একটি এসএমএস-এ জিয়া লিখেছিলেন, ‘তুমি হঠাৎ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে কেন? তুমি কি নিলুর সঙ্গে ডেট করছো? আমাদের মধ্যে এতো ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে কেন? তুমি আমার সঙ্গে দেখা করবে’? তবে ৯টা ৩০ এর দিকে একাধিকবার সুরাজকে কল করলেও তিনি ব্যস্ততার কারণে তা ধরতে পারেননি। পরবর্তীতে রাত ১০টা ৫৩ মিনিটে জিয়া সর্বশেষ এসএমএস করেন সুরাজকে।

সেখানে জিয়া লিখেছিলেন, সব কিছু যদি পরিবর্তন না হয় তবে আমি লন্ডন চলে যাবো। ১১ টার পর থেকে একাধিকবার সুরাজ জিয়াকে কল করেন, কিন্তু তা রিসিভ করেননি জিয়া।  ইতিমধ্যে জিয়ার মৃত্যুর জের ধরে সুরাজ পাঞ্চোলি ও তার বাবা আদিত্য পাঞ্চোলিকে জুহু পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জুহু পুলিশ স্টেশনের সিনিয়র ইন্সপেক্টর অরুণ ভাগোত জানিয়েছেন, সোমবার রাত ১১টা ২২ এর দিকে নিজ বেডরুমের ফ্যানে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় জিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। পরবর্তীতে তার মা বাসায় এসে মেয়ের লাশ ঝুলে থাকতে দেখতে পান ও আমাদের অবহিত করেন। আমরা প্রাথমিকভাবে এটি একটি আত্মহত্যার কেস হিসেবেই তদন্ত কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। তবে আমরা কোনো সুইসাইড নোট পাইনি। মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে সুরাজ ও আদিত্যকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমার মনে হয় আর ২-১ দিনের মধ্যেই এ মৃত্যুর রহস্যের জট খুলে যাবে। তবে সুরাজের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন ও পড়তি ক্যারিয়ারের হতাশা থেকেই জিয়া আত্মহত্যা করেছেন বলেই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। এদিকে পারিবারিক সূত্র থেকে জানা গেছে, জিয়া খান ৮ মাস আগেও একবার হাতের রগ কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ