পুরুষ দিয়ে ধর্ষিতার পরীক্ষা নয়

High-Court-sm20130120092335সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে নারীর বয়স নির্ণয় বা ধর্ষিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ এই আদেশের ফলে নারী ডাক্তার দিয়ে নারীর এসব পরীক্ষা করতে হবে।

এ সংক্রান্ত আদেশের বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত এক আদেশ অমান্য করার পর আদালতের নির্দেশে তিনি রোববার হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করার পর তাকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

রোবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ  এ আদেশ দেন।

আদালতে ডিজির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শম রেজাউল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি  অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায়।

সারাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ধর্ষিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নারী চিকিৎসক, নার্স ও এমএলএসএস নিয়োগ বিষয়ে আদালতের আদেশ কেন মানা হয়নি সে বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করে গত ২ এপ্রিল আদেশ দেন আদালত।

আদেশ অনুযায়ী তিনি হাজির হলে আদালত ডিজিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আমরা আপনাদের ডাকতে চাই না। আপনারাও ব্যস্ত মানুষ। জবাবে ডিজি বলেন, আমি নতুন নিয়োগ পেয়েছি। মাত্র একমাস হলো।

এ সময় ডিজির পক্ষের আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী নারী ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, এতো ডাক্তার পেলেন কোথায়।

জবাবে তিনি বলেন, নারী ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের সব অগ্রগতির প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতে না দেওয়ায় আমাদের ভুল হয়ে গেছে। এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

পরে আদালত ডিজিকে উদ্দেশ্যে করে আরও বলেন, আপনারা তদারকি করবেন। এরপর আদালত ডিজিকে অব্যাহতি দিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে দেন।

২০১৩ সালের এপ্রিলে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগ, নারীর জন্য এ কেমন ব্যবস্থা?’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ধর্ষণের শিকার নারীর শারীরিক পরীক্ষা করেন পুরুষ চিকিৎসক। ওই চিকিৎসককে সহায়তা করেন পুরুষ ওয়ার্ড বয়। দেশের সবচেয়ে গৌরবময় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের প্রমাণপত্র নিতে এসে নারীকে চরম লজ্জা আর অপমানের মুখোমুখি হতে হয় প্রায়ই।’
এ প্রতিবেদনটি একই বছরের ১৬ এপ্রিল আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বিএম ইলিয়াস কচি, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী। এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকা মেডিকেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নারী চিকিৎসক, নার্স ও এমএলএসএস নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ