খালেদার জন্মদিন নিয়ে হাসিনা উদ্বিগ্ন

sheikh shekh pm hasina শেখ হাসিনারিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনকে ‘মিথ্যা জন্মদিন’ বলে আখ্যায়িত করে তা পালন না করার অনুরাধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট ঘাতকের গুলিতে নিহত ছোটভাই শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন,  “বিরোধীদলীয় নেত্রী ১৫ অগাস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করেন। আমি বিরোধীদলীয় নেত্রীকে অনুরোধ করব, তিনি যেন মিথ্যা জন্মদিন পালন না করেন।”

পিতা মাতার থেকে জানতে পারা জন্মদিনকে বদলে খালেদা জিয়াকে স্কুলের নিবন্ধনে দেয়া জন্ম তারিখেই জন্মদিন পালনের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

শেখ হাসিনা বলেন, “উনি সেদিন যখন কেকে ছুরি চালায়, তখন মনে হয় আমার বুকে ছুরি চালাচ্ছে।… আমার প্রিয় ভাই রাসেলের মুখটা আমার সামনে ভেসে ওঠে। মনে হয়, রাসেলের হত্যার দিনে উনি কীভাবে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন! মিথ্যা উৎসব করেন!

“আমি উনাকে অনুরোধ করব, উনি যেন এই মিথ্যা উৎসব বন্ধ করেন।”

১৯৭৫ সালের ওই দিন ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে খুন হন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাসেল। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে। শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় বেঁচে যান।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ওই দিনটিতেই কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। তবে আওয়ামীলীগ দাবী করে তার আরও অনেক জন্মদিন রয়েছে।

খালেদা জিয়ার বাবা এস্কান্দার মজুমদারের বাড়ি ফেনী হলেও তিনি দিনাজপুরে ঠিকানা নেন। খালেদা জিয়ার জন্মও সেখানে। তার মায়ের নাম তৈয়বা মজুমদার।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দিনে খালেদার জন্মদিন পালন নিয়ে অনেক সমালোচনাও রয়েছে।

আর ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই রাসেল, যাকে শিশু বয়সেই ঘাতকের বুলেটে প্রাণ দিতে হয়। মায়ের কাছে নেয়ার কথা বলে বাড়ির দোতলায় নিয়ে তাকে গুলি করে সেনা সদস্যরা।

সেই ঘটনা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “যে ফুলটা ফোটার আগেই ঝরে গেছে। বাংলাদেশে এই ঘটনা যেন আর না ঘটে।”

হারানো ছোট ভাইয়ের কথা বলতে বলতে আবেগ আপ্লুত হযে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রাসেল ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মায়ের সঙ্গে বন্দি হয়েছিল সে। রাসেলের স্বপ্ন ছিল সেনা কর্মকর্তা হবে। তার সে স্বপ্ন পূরণ হবে না।

“যে মুহূর্তে ওর জন্ম হয় আমি তাকে কোলে তুলে নিই। মাথা ভরা চুল ফুট ফুটে শিশু। আর এ ধরণের জঘন্য ঘটনা ঘটুক তা চাই না। আর, সন্ত্রাস চাই না। আমরা প্রতিটি শিশুর নিরাপদ জীবন চাই।”

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্?ঠানের আয়োজন করে।

এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দাবা, চিত্রাঙ্কন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এবং এসএসসি পরীক্ষায় কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সংগঠনের মহাসচিব মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল বারাকত, সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি কে এম শহিদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান, সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান হাওলাদার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। শিশু-কিশোরদের পক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয় খাদিজা আক্তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ