কঠোর নিরাপত্তায় ঢাকার পথে সাকা

saka choudhuri সাকা চৌধুরী সালাউদ্দিন কাদের salauddin kaderরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, চট্টগ্রামঃ যুদ্ধাপরাধ মামলায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর রায়কে ঘিরে চট্টগ্রামে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন স্থানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি পাঁচ উপজেলায় নামানো হচ্ছে বিজিবি।

মঙ্গলবার সকালে রায়ের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য চট্টগ্রামের এই সংসদ সদস্যকে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান জেলার মো. মজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, পুলিশ প্রহরায় প্রিজন ভ্যানে করে সালাউদ্দিন কাদেরকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেই এ বিএনপি নেতাকে সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন ট্রাইব্যুনালে নেয়া হবে বলে উপ কারা মহা পরিদর্শক গোলাম হায়দার জানান।

এটিএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ মামলার রায় ঘোষণা শুরু করবেন। এই প্রথম বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় হতে যাচ্ছে।

হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো ২৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

ট্রাইব্যুনাল সোমবার রায়ের তারিখ জানানোর পর থেকেই সালাউদ্দিন কাদেরের জেলা চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (উত্তর) মো. ফরিদ উদ্দিন এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, নিয়মিত টহলের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

যে কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন ফরিদ উদ্দিন।

জেলার পুলিশ সুপার কেএম হাফিজ আক্তার জানান, রায় সামনে রেখে চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলায় মোতয়েন করা হচ্ছে বিজিবি। রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও সীতাকুণ্ডে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে তারা দায়িত্ব পালন করবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাকা চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। তিনি ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ।

পাশের উপজেলা রাঙ্গুনিয়া থেকেও তিনি এর আগে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচন করলেও রাঙ্গুনিয়ায় হেরেছিলেন।

একাত্তরে রাউজান এলাকাতেই সালাউদ্দিন কাদেরের নেতৃত্বে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় বলে অভিযোগ। এছাড়া নগরীর গণি বেকারিসংলগ্ন গুডস হিলে তার বাসায় মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামীদেরদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো বলে যুদ্ধাপরাধ মামলার তদন্তে উঠে এসেছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকাতেও তার প্রভাব রয়েছে বলে বিএনপি সংশ্লিষ্টরা জানান।

সালাউদ্দিন কাদেরকে মুক্তি না দিলে চট্টগ্রামের আদালত, চট্টগ্রাম বন্দর ভবন, বিদ্যুৎ ভবন, কাস্টমস ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে সম্প্রতি উড়ো চিঠি পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, রায়কে ঘিরে বন্দনগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের নাশকতা মোকতাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।

মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিনকে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর গত বছর ৪ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ