দক্ষিণ আফ্রিকায় পানশালায় বন্দুক হামলা, নিহত ৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, (২১ ডিসেম্বর) : দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরের উপকণ্ঠে একটি পানশালায় রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোর রাতে অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীদের গুলিতে নয়জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১০ জন। দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ হতাহতের এই তথ্য দিয়েছে। এই মাসে দেশটিতে এই ধরনের দ্বিতীয় গুলিবর্ষণের ঘটনা এটি। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
জোহানেসবার্গ শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে স্বর্ণখনি অধ্যুষিত এলাকা বেকারসডালের ওই পানশালায় রাত ১টার ঠিক আগে প্রায় ডজনখানেক লোক হামলা চালায়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ১০ জন নিহতের কথা বললেও পরে সেই সংখ্যা সংশোধন করে ৯ জনে নিয়ে আসে।
দক্ষিণ আফ্রকা পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুটি গাড়িতে করে আসা হামলাকারীরা পানশালার গ্রাহকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং পালানোর সময় এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ অব্যাহত রাখে।
প্রাদেশিক পুলিশ কমিশনার মেজর জেনারেল ফ্রেড কেকানা এসএবিসি টেলিভিশনকে জানান, নিহতদের মধ্যে একজন অনলাইন ভিত্তিক গাড়ি ভাড়া প্রতিষ্ঠানের চালকও ছিলেন, যিনি পানশালার বাইরে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ জানায়, হামলাকারীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।
আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা বর্তমানে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মাধ্যমে বাড়তে থাকা অপরাধ প্রবণতা ও দুর্নীতির সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক অপরাধ পরিসংখ্যান দেশটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ হত্যাকাণ্ডের হারের তালিকায় নিয়ে গেছে।
গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানী প্রিটোরিয়ার কাছে সলসভিল জনপদের একটি হোস্টেলে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে তিন বছরের এক শিশুসহ ১২ জনকে হত্যা করেছিল। পুলিশ জানায়, ঐ স্থানে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হতো।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য অনেক দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিকদের লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেও সেগুলোর মালিকানা নিয়ে আইন খুবই কঠোর। তবে, তা সত্ত্বেও দেশটিতে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অস্ত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৬৩ জন মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ ছিল তুচ্ছ তর্ক বা কথা কাটাকাটি। তবে ডাকাতি এবং গ্যাং সহিংসতাও এই সংখ্যা বৃদ্ধির বড় কারণ।
সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ একটি ঘটনায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে দেশটির ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে এক গ্রামীণ বসতবাড়িতে এক পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মনোয়ারুল হক/
