ধাওয়া করে কোপানোর পর পিটিয়ে খুন

রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিশ্বজিৎ দাস হত্যামামলার সাক্ষ্যে গত বছর সংঘটিত ওই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম।

বহুল আলোচিত এই মামলার শেষ সাক্ষী হিসেবে বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ জবানবন্দি দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এই পরিদর্শক।

তাজুলের জবানবন্দির পর ওই আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. নূরুজ্জামান আগামী ১ অক্টোবর তাকে আসামি পক্ষের জেরার দিন ঠিক করেছেন।

জেরা শেষ হওয়ার পর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি হবে। এরপর এই মামলার রায় হবে, যাতে আসামি রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২১ নেতা-কর্মী।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির সময় পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয় দরজি দোকানি বিশ্বজিৎকে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা তাজুল বলেন, সেদিন সকাল ৯টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মীরা অবরোধবিরোধী মিছিল বের করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট হতে মিছিলটি রায়সাহেব বাজার ঘুরে এসে ভিক্টোরিয়া পার্কের (বাহাদুর শাহ পার্ক) উত্তর পাশে পৌঁছালে কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয়।

“ওই সময় মিছিল থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘ধর ধর’ বলে চিৎকার করতে থাকে।বিশ্বজিৎ নামের ছেলেটিকে ধাওয়া করে আসামিরা ইনটেনসিভ ডেন্টাল কেয়ারের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে আসামি শাকিল, ইউনুছ, রাজন তাকে চাপাতি ও কিরিচ দিয়ে আঘাত করে।”

“পরে তাকে আবার নিচে আনা হয়। সেখানে ইমদাদ, নাহিদ, কাইয়ুমসহ অন্য আসামিরা লোহার রড, লাঠি দিয়ে পেটায়।”

গুরুতর আহত বিশ্বজিৎকে রিপন মিয়া নামে এক রিকশা চালক মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখে বলেন, বিশ্বজিৎ মারা গেছেন।

রিপন এই আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। সম্প্রতি তাকে পুলিশ পিটিয়ে আহত করলে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

ব্যাপক আলোচনায় থাকা এই ঘটনার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও বেশির ভাগ আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার মাত্র আট আসামি গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, এ এইচ এম কিবরিয়া, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা ও গোলাম মোস্তফা।

এদের সবাইকে বৃহস্পতিবার আদালতে আনা হয়। এদের মধ্যে এমদাদ, শাকিল, শাওন ও নাহিদ বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পলাতক ১৩ আসামি হলেন রাজন তালুকদার, ইউনুস আলী, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, আজিজুর রহমান, আলাউদ্দিন, ইমরান হোসেন, মীর নূরে আলম লিমন, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান, তারিক বিন জোহর তমাল, মনিরুল হক পাভেল ও মোশাররফ হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ