ছোট ভাইকে এবং সুস্থ মাকে রেখে এসেছিলাম। এখন আমার ভাই নেই, সুস্থ মা নেই

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ, ঢাকা (৬ অক্টোবর) : দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোনো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত, পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে কঠিন সময় পার করা তারেক রহমান বিবিসি বাংলার কাছে দেওয়া এই বিশেষ সাক্ষাৎকারে দেশের আগামী নির্বাচনে দলের কৌশল, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও নেতাকর্মীদের বিচার, বাংলাদেশের নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনীতি এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী নানা সমসাময়িক বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেছেন। আগামী নির্বাচন, নির্বাচনী সরকার গঠন, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরা, জামায়াত প্রসঙ্গ ও দলের নমিনেশন প্রক্রিয়া—এই ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি বিএনপির স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।

বিবিসি বাংলা: আপনি জুলাইয়ের সময়ের কথা বলছিলেন। সে সময়ের হত্যাকাণ্ডের কথা বলছিলেন। সেই জুলাই গণভুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে আপনার আপনাদের বা বিএনপির অবস্থানটা কী আসলে?

তারেক রহমান: দেখুন, আমি ১৭ বছর যাবত প্রবাস জীবনে আছি। ওয়ান ইলেভেন, তথাকথিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় যেই শারীরিক নির্যাতন আমার উপরে হয়েছিল তারপরে চিকিৎসার জন্য আমি এই দেশে আসি।

আমি যখন এখানে আসি, আমার ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম ছোট ভাইকে। আমি যখন এই দেশে আসি আমার সুস্থ মাকে আমি রেখে এসেছিলাম। একটি ঘর রেখে এসেছিলাম। যেই ঘরে আমি এবং আমার ছোট ভাই বড় হয়েছি। যেই ঘরে আমার বাবার স্মৃতি ছিল। যেই ঘরে আমাদের দুই ভাইয়ের সন্তানরা জন্মগ্রহণ করেছিল। যেই ঘরে আমার মায়ের বহু স্মৃতি ছিল।

সেই স্মৃতিগুলোকে ভেঙে চুড়ে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ভাইকে আমি রেখে এসেছিলাম সেই ভাই এখন আর নেই। যেই সুস্থ মাকে রেখে এসেছিলাম সেই সুস্থ মা এখন সুস্থ নেই। শুধু অসুস্থই নন, উনার উপরে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে।

আমি আমার পরিবারের যেই কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। এটিকে আপনারা কাহিনী বলুন, বা সংগ্রাম বলুন যেটাই বলুন না কেন, এটি শুধু আমার কাহিনী না, বা আমার পরিবারের কাহিনী না। এরকম কাহিনী বাংলাদেশের শত না, হাজার হাজার পরিবারের।

যে পরিবারের বাবা, যে পরিবারের ভাই, যে পরিবারের স্বামী তার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় মারা গিয়েছে, তা না হলে হ্যান্ডকাফ পারা অবস্থায় জেলের ভিতরে মারা গিয়েছে, সহায় সম্পত্তি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে- এই সকল অন্যায়, এই সকল হত্যা, এই সকল নির্যাতনের জন্য যারা দায়ী, যারা এসবের হুকুম দিয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিচার হতে হবে।

এটি প্রতিশোধের কোন বিষয় নয়। এটি ন্যায়ের কথা। এটি আইনের কথা। অন্যায় হলে তার বিচার হতে হয়। কার সম্পর্কে কী মনোভাব সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ