পদত্যাগের সিদ্ধান্ত রোকেয়া উপাচার্যের

Begum rokeya university বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি বিশ্ববিদ্যালয়রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, রংপুরঃ শিক্ষকদের আন্দোলনের মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রোববার সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এছাড়া এ সিদ্ধান্তের কথা শিগগিরই তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাবেন বলেও জানান।

পাঁচদিন অবরুদ্ধ থাকার পর শনিবার গভীর রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা অবরোধ তুলে নিলে তিনি কার্যালয় থেকে বের হয়ে আসেন। কিন্তু রোববার বিকাল ৩টা থেকে চাকরি হারানো ৩৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আবারো তাকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন।

সন্ধ্যা ৬টায় উপাচার্য এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “এত অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। অনেক আশা নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। গত পাঁচ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অনেক এগিয়েছি। কিন্তু একটি পক্ষ তা চায় না বলেই অযৌক্তিভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।”

দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলে তিনি রংপুরবাসীর কাছে ক্ষমা চান।

রোববার বেলা ৩টায় চাকরি হারানো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল কর্মকর্ত-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন।

সংগঠনের মুখপাত্র ও চাকরি হারানো নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, উপাচার্য চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করলেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক (রেজিস্ট্রার) শাহজাহান আলী মন্ডল এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন পাওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২৬০ জন। ইউজিসির নির্দেশ উপেক্ষা করে পদ সৃষ্টি না করেই আগের উপাচার্য ছয় মাস মেয়াদে অস্থায়ী ভিত্তিতে ৪১৪ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করেন। তাদের মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে।

অতিরিক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন দিতে গিয়ে অনুমোদিত শিক্ষক-কর্মচারীদের মে ও জুন মাসের বেতন ফুরিয়ে যায়।

এসব ঘটনায় গত ৫মে উপাচার্য ড. আব্দুল জলিল মিয়াকে অব্যাহতি দেয় আচার্যের দপ্তর।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের’ আহ্বায়ক ড. শরিফা সালোয়া ডিনা জানান, অবরোধ তুলে নেয়া হলে শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য ড. এ কে এম নূর-উন-নবী তার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ওই কার্যালয়েই উপাচার্যের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের সভা হয়।

ড. শরিফা এবিসি নিউজ বিডিকে জানান, দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার বৈঠকে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কিছু কিছু দাবি মেনে নেয়ায় আশ্বাস দেয়া হলে শিক্ষককরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহর করে নেন।

চার মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে ক্লাস বর্জন করে উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ এবং অবস্থান কমসূচি শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ।

শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আরেক অংশ অবরুদ্ধ উপাচার্যের কক্ষের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিন শিক্ষক।

অবরুদ্ধ উপাচার্য আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি পূরণের অশ্বাস দিলে অনশনকারীরা গত শুক্রবার তাদের কর্মসূচি স্থগিত করেন। কিন্তু অন্য শিক্ষকরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রেখে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। রোববার রাতে সিন্ডিকেট সভায় সমঝোতার প্রেক্ষিতে তারা সিদ্ধান্ত পাল্টান।

দাবি আদায়ে গত মাস থেকেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই আন্দোলন চলছে। এর আগে তারা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ