চসিকে ৪০ কোটি টাকার কর জালিয়াতি, দুদকের অভিযান

চট্টগ্রাম ব্যুরো, এবিসিনিউজবিডি, (২৫ অক্টোবর) : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগে বড় ধরনের কর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নগরীর দুটি কনটেইনার ডিপোর বার্ষিক কর মূল্যায়ন থেকে কৌশলে প্রথম অঙ্ক ‘২’ মুছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ তদন্তে বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চসিক কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জব্দ করে প্রাথমিক তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মধ্যম হালিশহরের এছাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও পতেঙ্গার লালদিয়া চরের ইনকনট্রেড লিমিটেড—এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ২০১৭–১৮ অর্থবছরে বার্ষিক কর মূল্যায়ন নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ও ২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। কিন্তু রিভিউ বোর্ডে শুনানির সময় ফরম থেকে প্রথম অঙ্ক ‘২’ মুছে ফেলা হয়। ফলে কর দাঁড়ায় যথাক্রমে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ও ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কর কমিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান দুটিও সুবিধাভোগী।

‘প্রাথমিক তদন্তে দেখেছি, নথিতে ঘষামাজা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের মালিকেরও যোগসাজশ রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। যেহেতু তারা বেনিফিশিয়ারি। সিগনেচার এক্সপার্টদের মতামত নেওয়া হবে। বিস্তারিত তদন্তে ব্যাংকিং হিসাব তদন্ত করা হবে।’

চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, ‘২০১৭-১৮ সালে চসিকের শেষ অ্যাসেসমেন্টকে ভিত্তি করে দুই কনটেইনার ডিপোতে অনিয়মটা হয়েছে। ২৬ কোটি ও ২৫ কোটিকে ঘষামাজা করে ৬ কোটি ও ৫ কোটি দেখানো হয়েছে। একজন টিও এবং দুজন ডিটিও সরাসরি দায়ী ছিলেন। হিসাব সহকারীরা বিষয়টি জানতেন। কর্মরত দুজনকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

‘হিসাব সহকারীদের ওএসডি করেছি। তাঁদেরও ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থায় চলে যাব। একজন অবসর নিয়েছেন। অবসরোত্তর বেনিফিটগুলো স্থায়ীভাবে স্থগিত করেছি। ক্ষতি নির্ধারণের বিষয় ছিল।’

আশরাফুল আমিন বলেন, ‘সরকারি কোনো সংস্থা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিলে আমরা সহযোগিতা করব। ২০২৩ সালে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে মাননীয় মেয়র ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বিভাগীয় প্রধানদের নিয়মিত পরিদর্শনের নির্দেশনা দিয়েছেন। রিভিউ বোর্ডের আগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে ২৬ কোটি ও ২৫ কোটি ধরে পুনরায় কর আদায় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ