রামুর পুনর্নির্মিত বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধন

Ramu রামুর পুনর্নির্মিত বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধনরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, কক্সবাজারঃ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত রামুর পুনর্নির্মিত বৌদ্ধ বিহারগুলো উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল সমুদ্রতীরবর্তী জেলা কক্সবাজারের রামু ও উখিয়া উপজেলার বৌদ্ধ বসতি। বসত ঘরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেয়া হয় বৌদ্ধদের প্রার্থনাস্থলও।

সরকারের উদ্যোগে বৌদ্ধ বিহার ও বসতিগুলো পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এর তত্ত্বাবধানে ছিল সেনাবাহিনী।

সকালে রামু পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে রামু উত্তর মিঠাছড়ির বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) বীর বাহাদুর ও ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ করুনা শ্রী ভিক্ষু।

এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া ও ১৭ ইসিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার রহমান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ ফুট দৈর্ঘবিশিষ্ট বুদ্ধমূর্তি ও ভাবনা কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে বিহার নির্মাণের একটি ভিডিওচিত্র দেখান সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এরপর তিনি সেখানে স্থাপিত ভাবনা কেন্দ্রসহ ১০টি বৌদ্ধ বিহারের ফলক উন্মোচন করেন। উদ্বোধন হওয়া বিহারসমুহ হল- রামু উপজেলার লাল চিং বিহার, সাদা চিং বিহার, আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহার, অপর্ণাচরণ বৌদ্ধ বিহার, উচাই সেন বিহার, তেজবন বৌদ্ধ বিহার, বন বিহার, অজান্তা বৌদ্ধ বিহার ও বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহার।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা, ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকসান্দার নিকোলোয়েভ, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল জহিরুদ্দীন আহমদ প্রমুখ।

ভাবনা কেন্দ্র থেকে দুপুর ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী মৈত্রী বিহারে যান। মৈত্রী বিহার উদ্বোধন শেষে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এসব বিহারের কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হয়েছে।”

সেনাসদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এরপর প্রধানমন্ত্রী সীমা বিহারে যান। সীমা বিহার উদ্বোধন শেষে বিহার সম্মেলন কক্ষে বৌদ্ধধর্মীয় নেতা ও সুধী সমাবেশ যোগ দেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বৌদ্ধধর্মীয় নেতা সংঘরাজ ধর্মসেন মহাথের, রামু সীমা বিহারের অধ্যক্ষ সত্যপ্রিয় মহাথের।

তারা বৌদ্ধ বিহারের স্থায়ী নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের বিশেষ সেল বসানোর এবং একইসঙ্গে ২৯ সেপ্টেম্বর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।

সেনাবাহিনীর ১৭ ইসিবি’র (প্রকৌশল ব্যাটালিয়নের) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার রহমান জানান, ১২টি বৌদ্ধ বিহার নির্মাণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।

সীমা বিহার থেকে দুপুর দেড়টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ইনানী রেস্ট হাউসে যান প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে বিশ্রাম শেষে তার উখিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। উখিয়া হাইস্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেয়া ছাড়াও সমাবেশস্থলে কক্সবাজার জেলার অর্ধ শতাধিক প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিস্থাপন করবেন তিনি।

বর্তমান মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো কক্সবাজার সফর করছেন। এর আগে ২০১১ সালে ৩ এপ্রিল কক্সবাজার সদরে, বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলার পর ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর রামুতে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ