গাজা যুদ্ধ থামাতে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা ট্রাম্পের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (৩০ সেপ্টেম্বর) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার যুদ্ধ অবসান এবং সব জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই পরিকল্পনা প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প জানান, আঞ্চলিক বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে দীর্ঘ পরামর্শের পর এই পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে তিনি বলেন, হামাস ছাড়া সবাই এ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ধারণা ইতিবাচক উত্তর আসবে। তবে না এলে, যেমনটা জানো বিবি (নেতানিয়াহু), তখন তোমাদের যা করতে হবে তার পূর্ণ সমর্থন আমরা দেব।’
ইসরায়েলের প্রায় দুই বছরব্যাপী অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা, সৃষ্টি হয়েছে খাদ্য-পানি সংকট, রোগব্যাধি ও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি।
হোয়াইট হাউস জানায়, ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজাকে একটি ‘সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল’ হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। উভয় পক্ষ প্রস্তাবে সম্মত হলে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হবে এবং ইসরায়েল সেনারা নির্দিষ্ট অবস্থানে সরে যাবে। এই সময়ে সামরিক অভিযান স্থগিত থাকবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী প্রস্তাব গ্রহণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল ২৫০ আজীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ও ১৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। মৃত জিম্মিদের প্রতিটি দেহ ফেরতের বিপরীতে ১৫ জন নিহত ফিলিস্তিনির দেহ ফেরত দেওয়া হবে।
অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে রাজি হওয়া হামাস সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। যারা গাজা ছাড়তে চাইবেন, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে পাঠানো হবে।
ট্রাম্প জানান, চুক্তি কার্যকর হলে জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্টসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে অবিলম্বে পূর্ণ মাত্রায় মানবিক সহায়তা প্রবাহিত হবে। এর মধ্যে অবকাঠামো পুনর্গঠন, হাসপাতাল, বেকারি, ধ্বংসাবশেষ সরানো ও সড়ক সংস্কারের সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, একটি অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামো বা ‘বোর্ড অব পিস’ গঠন করা হবে, যার চেয়ারম্যান থাকবেন স্বয়ং ট্রাম্প। এতে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতা থাকবেন। এই বোর্ড বিশ্বব্যাংকসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করে একটি নতুন ফিলিস্তিনি সরকার গঠনে সহায়তা করবে।
তবে তিনি স্পষ্ট করে দেন, হামাস বা অন্য কোনো সশস্ত্র সংগঠন এই শাসন কাঠামো বা গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে কোনোভাবেই যুক্ত হতে পারবে না।
ট্রাম্প বলেন, নেতানিয়াহু তার সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট করেছেন যে তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিপক্ষে। ইউরোপের কিছু দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা মূলত ক্লান্ত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তবে এটি একটি ভুল পদক্ষেপ।’