কোনো দল বা প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার ওয়াদা করুন: সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (২৭ সেপ্টেম্বর) : আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও প্রশ্নাতীত রাখতে সারা দেশের নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ওয়াদা আদায় করে নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা ওয়াদা করুন, কোনো দল বা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন না।’
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা’ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বেলা ১১টায় আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে চার নির্বাচন কমিশনার- আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমবারের মতো এ সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিইসিওএ)। লক্ষ্য ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য ‘ইলেকশন কমিশন সার্ভিস’ চালুর বিষয়ে আইন সংশোধনে সরকারের সম্মতি আদায় করা।
অনুষ্ঠানে ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘এই সম্মেলনে সারা দেশ থেকে নির্বাচন কমিশনের আট শতাধিক প্রথম শ্রেণির নিজস্ব কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।’
মনির হোসেন জানান, এনআইডি সেবা দিয়ে যাচ্ছে কর্মকর্তারা। শুরু থেকেই জনবলের তো ঘাটতি ছিল। এরইমধ্যে ভোটার বাড়তে থাকায় এনআইডি দেড়গুণ হয়েছে, কিন্তু সেই অনুপাতে জনবল বাড়েনি। উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ও সার্ভার স্টেশন নির্মাণে অবকাঠামো আধুনিকায়নের পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরিতে উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি।
উল্লেখ্য নির্বাচন কমিশন সার্ভিস গঠন, সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া; পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকসহ প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম ইসির হাতে রাখার দাবি জানিয়ে আসছে কর্মকর্তাদের এই সংগঠন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আয়োজিত এ ‘মিলনমেলায়’ নিজেদের দাবি উপস্থাপন করেছেন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোট প্রস্তুতির বিষয়ে নানা দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের পাশাপাশি ১০ আঞ্চলিক, জেলা অফিস, পাঁচ শতাধিক থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসে পাঁচ সহস্রাধিক লোকবল রয়েছে। এ ছাড়া এনআইডি উইংয়ের রয়েছে সহস্রাধিক লোকবল। এরমধ্যে আট শতাধিক প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা রয়েছেন।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু থেকেই নির্বাচনি দায়িত্বের পাশাপাশি ইসি কর্মকর্তাদের এনআইডি সেবার কাজে সম্পৃক্ততা বাড়ে।
তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে আঞ্চলিক, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে সার্ভার স্টেশন নির্মাণ ও আধুনিকায়নের ব্যবস্থা নেয় সরকার। সম্প্রতি এনআইডি সেবা নিয়ে ‘টানাটানি’ ও ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতিকে সামনে রেখে নানা দাবিতে সক্রিয় হয় ইসি ও প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ পরিস্থিতিতে ২০০৯ সালের আইন সংশোধন করে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ ১৮ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন করায় ইসি সার্ভিস গঠনের পথ প্রশস্ত হয়।