বাচ্চু পরিবারের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে দুদক

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক লেনদেনের সব নথিপত্র চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। আজ রোববার বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই চাহিদাপত্র পাঠানো হয় বলে দুদকের সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দুদকের এই চাহিদাপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি ব্যাংক থেকে আর্থিক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করে দুদককে দেবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো চিঠিতে দুদক বলেছে, বাচ্চুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে ঋণ জালিয়াতির অর্থ ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের চিঠিতে বাচ্চু ছাড়াও তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তানসহ পরিবারের দশজন সদস্যের লেনদেন–সংক্রান্ত তথ্য এবং তাঁর ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্নার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ক্রাউন প্রোপার্টিজ, বিএম কম্পিউটার্স এবং ইডেন ফিসারিজ লিমিটেডের আর্থিক লেনদেনের তথ্য চেয়েছে দুদক।

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে ৪ ডিসেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক। এর আগে দুদক বেসিক ব্যাংকের সাবেক ১০ জন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। আবদুল হাই বাচ্চুসহ পর্ষদের ১১ জনকে পর্যায়ক্রমে তলব করা হয়।

আবদুল হাই বাচ্চুর নেতৃত্বাধীন পর্ষদ ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত মাত্র ১১ মাসে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ঋণের নামে বিভিন্নজনকে দিয়ে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তখন তদন্ত করে বলেছিল, ‘৪০টি দেশীয় তফসিলি ব্যাংকের কোনোটির ক্ষেত্রেই পর্ষদ কর্তৃক এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না। এই ঋণ আদায়ের সম্ভাবনাও কম।’

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ২০১৫ সালের শেষ দিকে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় বেসিক ব্যাংকের ২৭ কর্মকর্তা, ১১ জরিপকারী ও ৮১ ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানসহ ১২৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলাগুলো তদন্ত করছেন দুদকের ১০ কর্মকর্তা। তবে কোনো মামলাতেই আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। এ নিয়ে জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদ, ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞ এবং সর্বশেষ আদালত পর্যন্ত সমালোচনা করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৫৩ শতাংশ (৭ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা), যা যেকোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হারের চেয়ে বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ