বিদায়ের সুর বইমেলায়

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) : বিদায়ের সুর বাজছে অমর একুশে বইমেলায়। বইপ্রেমীদের হয়তো মনে পড়ছে কবিগুরুর বিখ্যাত সেই উক্তি, ‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়’। মেলার এক মাস বইপ্রেমীদের মিলনমেলা ছিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। আজ সোমবার অমর একুশে বইমেলার ২৭তম দিন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভাঙ্গবে মিলনমেলা।

করোনা মহামারির পর এ বছর ভাষার মাসের প্রথম দিনই শুরু হয় বইমেলা। সে কারণেই এবারের বইমেলায় প্রত্যাশাও ছিল বেশি। শেষের দিকে জঙ্গিগোষ্ঠী মেলায় বোমা হামলার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠালেও দর্শনার্থীদের ভিড়ে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। এ বছর দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শুরুর দিন থেকে প্রতিদিনই দর্শনার্থী-পাঠকরা মেলায় ভিড় জমিয়েছে।

শুরুর দিকে বইয়ের বিক্রি কম থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। এতে প্রকাশকদের মুখেও হাসি ফুটেছে। এবারের বইমেলার আগেই বিশ^বাজারে কাগজের দাম বেড়েছে অনেকটাই। ফলে বইয়ের দামের ওপর এর প্রভাব পড়েছে অনেক। তারপরও পাঠকরা বই কিনেছেন। এর বাইরে প্রতিবার শেষের দিকে বৃষ্টির বাগড়ায় অনেক বই নষ্ট হয়। এ বছর প্রকৃতির সে বিরূপ আচরণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।

মেলায় বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি নানা বয়সি মানুষ বইমেলায় এসেছেন; মনের আনন্দে ঘুরে বেরিয়েছেন; বই দেখেছেন; সংগ্রহ করেছেন। এভাবেই কেটেছে বইমেলার প্রতিটি দিন। ব্যস্ততার জন্য সাধারণ দিনে যারা মেলায় আসতে পারেননি, বন্ধের দিনে তারা ঠিকই হাজির হয়েছেন প্রাণের মেলায়। ফলে ছুটির দিনগুলোতে সবচেয়ে মুখরিত থাকত বইমেলা। এ দুদিন বইয়ের বিক্রিও থাকত অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি।

বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে শিশুপ্রহর। বইমেলা চলাকালীন শুক্র ও শনিবার আয়োজন করা হয় শিশুপ্রহরের। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর শিশুপ্রহর আয়োজন নিয়ে ছিল নানা সীমাবদ্ধতা। তবে এ বছর শিশু চত্বরের স্থান পরিবর্তন করে বড় আকারে যাত্রা করে। শুরুর দিকে প্রস্তুতির ঘাটতি থাকায় কিছুটা রং হারিয়েছিল এ চত্বর। তবে এর পরপরই মেলায় জমে ওঠে শিশুপ্রহর। প্রতিটি শিশুপ্রহরে অসংখ্য শিশু এসেছে, পছন্দের বই কিনেছে। খেলেছে সিসিমপুরের প্রিয় চরিত্রগুলোর সঙ্গে।

Leave a Reply

Facebook
%d bloggers like this:
ব্রেকিং নিউজ