সামরিক খাতে দুর্নীতি : বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পর্বে বাংলাদেশ

ঢাকা : সামরিক খাতে বাংলাদেশ দুর্নীতির ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। প্রথমবারের মতো পরিচালিত এ সংক্রান্ত এক জরিপে একথা বলা হয়।
মঙ্গলবার লন্ডনে জরিপের ফল প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি বলেছে, ৭০ শতাংশ দেশেই এই খাতে দুর্নীতি রোধে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থার অভাব রয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সির যুক্তরাজ্য শাখা তার আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মসূচির অধীনে জরিপটি পরিচালনা করে।
জরিপে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ পর্ব ‘ডি’তে ২৯টি দেশের সঙ্গে স্থান পায় বাংলাদেশ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০১১ সালে বিশ্বে সামরিক খাতে যে ব্যয় হয়েছে, তার ৯৪ শতাংশ ব্যয় করেছে যে ৮২টি দেশ, সেসব দেশে সংস্থাটি এই জরিপ চালায়।
জরিপে পাঁচটি বিষয়ে দুর্নীতির ঝুঁকি বিচার করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে: রাজনৈতিক, আর্থিক, সামরিক বাহিনী বা প্রতিরক্ষা খাতে নিয়োজিত সদস্যদের ভূমিকা, সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম বা অপারেশন পরিচালনা এবং ক্রয়।
দুর্নীতির ঝুঁকির দিক থেকে এসব দেশকে প্রধানত পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। রাশিয়া, ভারত, চীন, পাকিস্তান ও নেপাল একই গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে ‘বি’ শ্রেণী বা কম ঝুঁকির গ্রুপে। সূচক অনুযায়ী, শুধু জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ‘এ’ শ্রেণীতে অর্থাৎ ঝুঁকি সবচেয়ে কম। নয়টি দেশ রয়েছে সংকটজনক ঝুঁকিতে অর্থাৎ ‘এফ’ শ্রেণীতে আর খুব বেশি ঝুঁকি ‘ই’ শ্রেণীতে আছে ১৮টি দেশ।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আর্থিক দুর্নীতির ঝুঁকি অংশে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত গোপন বিষয়গুলো সম্পর্কে সংসদে যেমন কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় না, তেমনি নিরাপত্তা খাতের বার্ষিক হিসাবের নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়েও কোনো বিতর্কের প্রমাণ মেলে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাণিজ্যে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অংশগ্রহণ রয়েছে। যার মধ্যে আছে, সরকারি জমিতে নির্মিত পাঁচ তারকা হোটেল ঢাকা র‌্যাডিসন, ব্যাংকিং, খাদ্য, ইলেকট্রনিকস এবং বস্ত্রশিল্পে কার্যক্রম। এসব ব্যবসা সরকার অনুমোদিত হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা তাদের রীতি-প্রকৃতি স্বচ্ছ নয়। বাজেটবহির্ভূত সামরিক ব্যয়ের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অপারেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে দুর্নীতির ঝুঁকি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে দুর্নীতি মোকাবিলাকে অপারেশনের কৌশলগত বিষয় হিসেবে গ্রহণের কোনো সামরিক নীতি নেই। মাঠ পর্যায়ে অপারেশনে সম্ভাব্য দুর্নীতির ওপর নজরদারির জন্যও কোনো ব্যবস্থা চালু থাকার দৃষ্টান্ত নেই।

Leave a Reply

Facebook
%d bloggers like this:
ব্রেকিং নিউজ