রাশিয়াকেই যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে: ব্রাসেলসে জেলেনস্কির হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, (১৮ ডিসেম্বর) : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য অর্থায়নের একাধিক পথ থাকলেও সবচেয়ে ‘ন্যায়সঙ্গত’ উপায় হলো রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ আদায় করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এর মাধ্যমেই রাশিয়া বুঝতে পারবে যে তারা অপরাধী এবং তাদের কৃতকর্মের দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ব্রাসেলসে ইইউ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার, নিরাপত্তা গ্যারান্টি এবং যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে কড়া বার্তা দেন।

জেলেনস্কি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাশিয়ার যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ হয়ে আছে, তা ইউক্রেনের দরকষাকষির অবস্থান শক্তিশালী করতে অত্যন্ত জরুরি। তিনি সতর্ক করে বলেন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ এই সম্পদ ব্যবহারের বিষয়ে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।

জেলেনস্কির দেওয়া তথ্যমতে, ইউরোপীয় দেশগুলো যদি জব্দকৃত রুশ অর্থ ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ না করে, তবে আগামী বছর কিয়েভ প্রায় ৫০ বিলিয়ন ইউরো (৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বৈদেশিক সহায়তার ঘাটতিতে পড়বে। তিনি আরও বলেন, “যদি বসন্তের মধ্যে ইউক্রেন প্রয়োজনীয় অর্থ না পায়, তবে আমাদের ড্রোন উৎপাদন কমিয়ে দিতে হবে।”

নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি নিয়ে জেলেনস্কি তার উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধের অবসান নিশ্চিত নয়। তার প্রধান লক্ষ্য এখন একটি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া— “যদি রাশিয়া আবারও আগ্রাসন চালায়, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য অংশীদাররা কী করবে?”

কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করলেও জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ার কাছ থেকে আমরা শান্তির চেয়ে যুদ্ধের কথাই বেশি শুনছি। তাদের পক্ষ থেকে আসা সংকেতগুলো কোনোভাবেই ইউরোপের সঙ্গে শান্তির ইঙ্গিত দেয় না।” তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে সামরিকভাবে আরও শক্তিশালী হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সফরকালে জেলেনস্কি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট ডি ওয়েভারের সঙ্গেও আলোচনা করেন। উল্লেখ্য যে, ডি ওয়েভার এর আগে ইউক্রেনের জন্য রুশ সম্পদ ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন। এই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেন, “আলোচনা হয়েছে, তবে তা কতটা ফলপ্রসূ তা সময়ই বলে দেবে।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জেলেনস্কির এই বক্তব্য মূলত ইউরোপীয় নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশল, যাতে শীত মৌসুম শুরুর আগেই ইউক্রেনের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ও সামরিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। সূত্র: আল জাজিরা

মনোয়ারুল হক/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ