ফ্লোটিলায় হামলা, বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (৩ অক্টোবর) : গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহরের জাহাজগুলোকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করেছে ইসরায়েলি কমান্ডোবাহিনী। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে।

ফ্লোটিলায় থাকা অধিকারকর্মীরা জানান, তারা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র। তারা মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজায় যাচ্ছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা পাঠানোর কাজে বাধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই।

ফ্লোটিলার নৌবহরে থাকা জাহাজগুলোকে বাধা দেওয়ায় বাংলাদেশ, স্পেন, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, ইতালি, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ বহু দেশ তীব্র প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানিয়েছে।

স্পেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানান। স্পেন সরকারও জানায়, এটি একটি শান্তিপূর্ণ প্রচেষ্টা ছিল এবং নৌবহরের ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয়।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী আচরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশটি বলেছে, এই আক্রমণ নিরপরাধ মানুষের জীবন হুমকিতে ফেলেছে এবং গাজায় দুর্ভিক্ষ আরও বাড়াবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা অবিলম্বে ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকারীদের মুক্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও এই ফ্লোটিলায় ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা একে গাজার প্রতি সংহতির প্রতীক বলেছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিন নয়, সারা বিশ্বের বিবেককে অপমান করছে। তিনি জানান, তার সরকার আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পদক্ষেপ নেবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ একে কাপুরুষোচিত হামলা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশের পক্ষে জোর দিয়েছেন।

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো ইসরায়েলি কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও বাতিল করেন।

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইসরায়েল আশ্বাস দিয়েছে তারা সহিংসতা করেনি। তবে ইতালির শ্রমিক ইউনিয়নগুলো সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে গাজার প্রতি সংহতি জানাতে।

যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং ফ্লোটিলায় থাকা ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

আয়ারল্যান্ড ও গ্রিস যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কনস্যুলার সহায়তা দিতে বলেছে। আইরিশ প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিন্স বলেন, এটি একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়।

এদিকে বার্লিন, ব্রাসেলস, এথেন্স, মাদ্রিদ, রোম, বুয়েনস আইরেসসহ বহু শহরে গতকাল বিক্ষোভ হয়েছে। মানবিক সহায়তাকাজে বাধা দেওয়ায় মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ