যুক্তরাষ্ট্রে গির্জায় সাবেক মার্কিন সেনার গুলি, হামলাকারীসহ নিহত ৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (২৯ সেপ্টেম্বর) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে এক বন্দুকধারী গাড়ি নিয়ে গির্জায় ঢুকে গুলি চালিয়ে অন্তত চারজনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আরও আটজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হামলাকারীও নিহত হয়।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক শহরে ‘চার্চ অব জিজাস ক্রাইস্ট অব ল্যাটার-ডে সেইন্টস’-এ এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, হামলাকারীর নাম টমাস জেকব স্যানফোর্ড (৪০)। তিনি নিকটবর্তী বার্টন শহরের বাসিন্দা এবং সাবেক মার্কিন মেরিন। তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, স্যানফোর্ড গাড়ি দিয়ে গির্জার প্রধান দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন, এরপর অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে গুলি চালান এবং ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা গিয়ে প্রতিরোধ করেন এবং মাত্র আট মিনিটের মধ্যে গির্জার বাইরে গুলিবিনিময়ে হামলাকারী নিহত হন।
প্রথমে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জন নিহত হন এবং আটজন হাসপাতালে ভর্তি হন। কয়েক ঘণ্টা পর দমকল কর্মীরা গির্জার ভেতর আরও অন্তত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ বলছে, এখনো কিছু লোক নিখোঁজ আছেন। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, হামলাকারী পেট্রল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করেছিলেন এবং ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরকও উদ্ধার করা হয়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী পলা স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে বলেন, ‘আমি বড় ধরনের একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনি এবং দরজা উড়ে যায়। আমি আমার বন্ধুদের হারিয়েছি। আমার ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীরাও আহত হয়েছে। এটা আমার জন্য খুব ধ্বংসাত্মক।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক বিবৃতিতে বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিস্টানদের ওপর আরেকটি উদ্দেশ্যমূলক হামলা বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে সহিংসতার এই মহামারি অবশ্যই এখনই বন্ধ করতে হবে।’
ঘটনার তদন্তে এফবিআই নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং এটিকে ‘টার্গেটেড ভায়োলেন্স’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এই মিশিগান হামলাটি ২০২৫ সালের ৩২৪তম গণহত্যার ঘটনা বলে জানিয়েছে গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এটি ছিল তৃতীয় গণহত্যা। এর আগে নর্থ ক্যারোলাইনার সাউথপোর্টে এক সাবেক মেরিন বন্দুকধারী বারে হামলা চালিয়ে তিনজনকে হত্যা ও পাঁচজনকে আহত করে। আর টেক্সাসের ঈগল পাস শহরে একটি ক্যাসিনোতে গুলি চালিয়ে অন্তত দু’জন নিহত হন।