জিহাদকে উদ্ধারে ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

High-Court-sm20130120092335সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীর শাহজাহানপুরে রেলওয়ে মাঠের অদূরে পাম্পের পাইপে পড়ে যাওয়া শিশু জিহাদকে উদ্ধারে বিবাদীদের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে পৃথক রিট আবেদন করা হয়েছে। একটিতে জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়েছে। অপরটিতে জিহাদকে উদ্ধারে ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

শিশু অধিকার রক্ষাবিষয়ক সংগঠন চিলড্রেনস চ্যারেটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের (সিসিবি ফাউন্ডেশন) পক্ষে আজ রোববার আইনজীবী আবদুল হালিম সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন, যার নম্বর-১২৩৮৮/২০১৪। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাইনুল হকের পক্ষে অপর রিটটি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, যার নম্বর-১২৪০৮/২০১৪।

রিট আবেদনের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, জিহাদকে উদ্ধারে ব্যর্থতা অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য উদ্ধারকারী স্বেচ্চাসেবীসহ বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন এবং কমিটির প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। শিশুটির বাবাকে আটকে রাখা ও তাঁর প্রতি অমানবিক আচরণের জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রুহুল কুদ্দুস বলেন, রিটে জিহাদকে জীবিত উদ্ধারে ব্যর্থতা, অবহেলার কারণে তার মৃত্যু এবং তার বাবকে আটকে রাখায় যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

অন্যদিকে, সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে করা রিটে জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। সারা দেশে অরক্ষিত ও উন্মুক্ত পাইপ, কূপ, টিউবওয়েল, সুয়ারেজ পাইপ, গর্ত এবং পানির ট্যাংকের তালিকা তৈরি করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। অরক্ষিত পাইপ, গর্ত, পানির ট্যাংকের কারণে অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা রোধে নীতিমালা করার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, এ মর্মেও রুল চাওয়া হয়েছে।

পরে আইনজীবী আবদুল হালিম বলেন, সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে শিশুটির জীবনের অধিকার ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার কারণে রিটটি করা হয়। শিশুটি উদ্ধারে অবহেলাজনিত মৃত্যুতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। এ সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

রিটে উদ্ধার অভিযান পরিত্যগ ঘোষণার ১৫ মিনিটের মধ্যে শিশুটিকে উদ্ধার করা মো. আনোয়ার হোসেন, নুর মোহাম্মদ লিটু, আবু বকর সিদ্দিকী বাবলু, শফিকুল ইসলাম, মো. ফারুক ও মো. কবিরকে সন্মান ও পুরস্কার দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষত ওই দুর্ঘটনাসহ অরক্ষিত পাইপ, গর্ত, পানির ট্যাংক ও সুয়ারেজ পাইপে এ ধরনের দুর্ঘটনায় জীবন রক্ষায় কী ধরনের প্রযুক্তি ও দক্ষতা রয়েছে, সে-সংক্রান্ত সব তথ্য কেন আদালতে উপস্থাপন করা হবে না, এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে।

রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব, রেলওয়েসচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, রেলওয়ের মহাপরিচালক, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপরারেশন অ্যান্ড মেনটেইন্যান্স), ওয়াসার চেয়ারম্যান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ