৪ জনকে পুড়িয়ে হত্যা

Fire আগুনরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, গোপালগঞ্জঃ জেলার সদর উপজেলায় ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে শাশুড়িসহ চারজনকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে জামাতা। শনিবার গভীর রাতে উপজেলার ডুমদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন— ডুমদিয়া গ্রামের প্রয়াত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রী ফুড়িয়া বেগম (৬৫), ফুড়িয়া বেগমের নাতি তামিম ( ৮), আমিনুর সরদার (১৩) ও নাতনি তনিমা (৫)। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দাবি- ফুড়িয়া বেগমের মেয়ে শরিফা বেগমের সাথে তার স্বামী পাশ্ববর্তী চরমানিকদহ গ্রামের আজাদ মোল্লার মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে আজাদ মোল্লাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এমনকি এ ঘটনার আগে আজাদ মোল্লা শাশুড়ি ফুড়িয়া বেগমকে মোবাইল ফোনে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। নিহত তামিম, আমিনুর ও তনিমা— তিনজনই শরিফার বোনের ছেলেমেয়ে। পাইককান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির গাজী জানান, শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ফুড়িয়া বেগমের ঘরের দরজার বাইরে থেকে ছিকল দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি জানান, এসময় ঘরের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা শাশুড়ি ফুড়িয়া বেগম, তার নাতি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আমিনুর ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র তামিম দগ্ধ হয়ে ঘরের মধ্যেই মারা যায়। এ সময় ঘর ও ঘরের মালামাল পুড়ে যায়। মনির গাজী জানান, পরে স্থানীয়রা অগ্নিগদ্ধ অবস্থায় তনিমা ও রনি বেগমকে জানালা ভেঙ্গে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দুটার দিকে শিশু তনিমার মৃত্যু হয়। আজাদ মোল্লার স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, “পারিবারিক কলহের জের ধরে আমার স্বামী আজাদ মোল্লার সঙ্গে মনোমালিন্য চলে আসছিল। আমি দুই ছেলেকে নিয়ে মায়ের সাথে ডুমদিয়া গ্রামের বাবার বাড়িতে থাকতাম। রাজ মিস্ত্রির জোগালদারের কাজ করে সংসার চালাতাম।” তিনি বলেন, “দুই দিন আগে আমার কাছে থাকা দুই ছেলে সাব্বির ও বাপ্পীকে কৌশলে আজাদ নিজের কাছে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় আজাদ আমার মাকে মোবাইল ফোনে আগুনে বাড়িঘর জ্বালিয়ে সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়। রাতে আমি আমার মা, বোন ও বোনের ছেলেমেয়েরা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। গভীর রাতে আমাদের বাড়িতে আজাদ এসে বাইরে থেকে দরজার ছিকল লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়।” শরিফা বলেন, “এসময় আমার মা আগুন আগুন বলে চিৎকার দিলে আমি জানালা ভেঙ্গে বেড়িয়ে যাই। ঘরের মধ্যে থেকে সবাই দরাজা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বাইরে দিয়ে ছিকল দেওয়া থাকায় কেউই বের হতে পারেনি। এতে আগুনে পুড়ে আমার মা ও দুই ভাগ্নে মারা যায়। বোন রনি ও ভাগ্নি তনিমাকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত দুটার দিকে তনিমা হাসপাতালে মারা যায়। বোন রনির অবস্থাও আশংকাজনক। আমি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।” গোপালগঞ্জের এএসপি (সার্কেল) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আজাদ মোল্লাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ