জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তাকাইচি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (২১ সেপ্টেম্বর) : জাপানে নারী নেতৃত্ব উঠে আসার দৃষ্টান্ত বেশ বিরল হলেও আসন্ন নির্বাচন দেশটির রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এবার জাপানে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্ব নির্বাচনের দৌড়ে অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছেন সানায়ে তাকাইচি। 

আগামী অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর নেতৃত্বে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন রক্ষণশীল ইমেজের জন্য পরিচিত তাকাইচি এবং কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি। গত বছর বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার কাছে রানঅফ রাউন্ডে অল্পের জন্য হেরে যান তিনি।

এলডিপির নেতৃত্বে নির্বাচনী ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই যদি তাকাইচি দল এবং সংসদীয় ভোটে জয় পান, তবে তিনিই হবেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতিতে লিঙ্গ সমতার সীমিত অগ্রগতির দেশটিতে এটি হবে এক যুগান্তকারী অর্জন।

নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ল-এর অধ্যাপক হিরোকো তাকেদা বলেন, ‘‘একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়া বিশ্বে জাপানকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে।’’

যদি তাকাইচি দল এবং সংসদীয় উভয় ভোটেই জয়ী হন, তবে তিনি জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেবেন। আর সেটি হবে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত।

নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ল-এর অধ্যাপক রাজনীতি লিঙ্গ বিষয়ক গবেষক ও  হিরোকো তাকেদা বলেন, ‘একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্যিই বিশ্ব জাপানকে কীভাবে দেখে, সেই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে পারে।’

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে জাপান ১৪৮টি দেশের মধ্যে ১১৮ তম স্থানে রয়েছে। যেখানে সেনেগাল এবং অ্যাঙ্গোলার মতো দেশগুলোও জাপানের চেয়ে এগিয়ে। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অংশগ্রহণে এই এশীয় দেশটির স্কোর বিশেষভাবে দুর্বল। দেশটিতে আগে কখনো কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হননি।

এমনকি সংসদেও নারী প্রতিনিধিত্বও সীমিত। ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট পর্যন্ত নিম্নকক্ষের মাত্র ১৫ দশমিক শতাংশ সদস্য নারী, যা বৈশ্বিক গড় ২৭ দশমিক শতাংশ এবং এশীয় আঞ্চলিক গড় ২২ দশমিক শতাংশের চেয়ে অনেক কম।

কিছু রাজনীতি বিশেষজ্ঞ বলছেন, তাকাইচিকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার নেপথ্যে ‘গ্লাস ক্লিফ’ ঘটনার থাকতে পারে। এর অর্থ হলো, সংকটের সময়ে নারীদের নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে উৎসাহিত করা। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যর্থতার ঝুঁকি যখন অনেক বেশি থাকে, তখনই নারীদের সামনে ঠেলে দেওয়া হয়!

পরপর দুটি নির্বাচনী ব্যর্থতার পর এলডিপি পার্লামেন্টের দুই চেম্বারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াই ক্ষমতা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। 

সেক্ষেত্রে, পরবর্তী নেতাকে একটি বিভক্ত আইনসভার দায়িত্ব নিতে হবে। নতুন প্রধানমন্ত্রীকে গুরুত্বপূর্ণ আইন, যেমন জাতীয় বাজেট এবং অর্থনৈতিক প্যাকেজ পাস করার জন্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। 

কিছু বিশ্লেষক সতর্ক করেছেন, পরবর্তী প্রশাসন স্বল্পস্থায়ী হতে পারে, কারণ অনাস্থা ভোটের ঝুঁকি ইতিমধ্যেই সামনে রয়েছে।

 

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ