সমাজ বদলাতে মানুষের কাছে যেতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (২০ সেপ্টেম্বর) : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজ যাঁরা বিপ্লব করতে চান, সমাজ বদলাতে চান, সাধারণ মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করতে চান, তাঁদের সেই সংগঠনকে অবশ্যই শক্তিশালী করতে হবে, আরো মজবুত করতে হবে। একেবারে মানুষের কাছে চলে যেতে হবে—তাহলেই সেটা সম্ভব হবে।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমির সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে আয়োজিত শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কমরেড বদরুদ্দীন উমরের সঙ্গে আমার খুব বেশি মেলামেশা করার সুযোগ হয়নি। উপদেষ্টা আবরার সাহেবের বাসায় গিয়েছিলাম, সেখানে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বদরুদ্দীন উমর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের সঙ্গে কখনো আপস করেননি। আমরা যারা আজ রাজনীতি করছি, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। কারণ তিনি কখনো আপস করেননি। তবে নতুন প্রজন্ম উমর সাহেবের কাছ থেকে কতটুকু নিতে পেরেছে, সেটা আমার জানা নেই।’
শোকসভার শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বদরুদ্দীন উমর অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক ক্ষেত্রে তিনি অদ্বিতীয়। আমাদের সমাজে অবসাদ, ভীতি বা মোহ যেভাবে কাজ করে, তাঁর ক্ষেত্রে তা কখনোই প্রভাব ফেলেনি। তিনি ছিলেন নিরলস কর্মী—ক্লান্তি তাঁর অভিধানে ছিল না। ভয়—যা আমাদের সমাজে বিস্তৃত, উমর কখনো তা অনুভব করেননি।’
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস বুঝতে হলে বদরুদ্দীন উমরের কাছে যেতে হবে। বাংলাদেশকে রক্ষা ও উদ্ধার করতে হলে সেই সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তি তৈরি করতে হবে, যার কথা তিনি বারবার বলেছেন। এ জন্যই বদরুদ্দীন উমর আমাদের আগামী দিনের যাত্রায় অনিবার্য সঙ্গী হয়ে থাকবেন।’
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বদরুদ্দীন উমরের মতো মানুষ আবার কবে আসবেন, জানি না। তবে চাই, আমাদের রাজনীতি ও নেতৃত্বে তাঁর মাপের গুণাবলির বিকাশ হোক। তাহলে সমাজ, রাজনীতি ও দেশ গুণগতভাবে বদলে যাবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাহাত্তর-পঁচাত্তর সালে যখন দোর্দণ্ড ত্রাসের শাসন চলছিল, সেই সময়ে বদরুদ্দীন উমর প্রায় একাই আওয়ামী শাসনের কর্তৃত্ববাদী চেহারা উন্মোচন করেছেন। তিনি যা কিছু লিখেছেন, রাজনীতির প্রয়োজনে লিখেছেন। দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে তাঁর লেখা ও কাজ দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে যাবে।’