ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কাতারের পাশে ইসলামি বিশ্ব: এরদোয়ান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (১৬ সেপ্টেম্বর) : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ‘কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত চলমান আরব-ইসলামি সম্মেলন প্রমাণ করেছে, ইসলামি বিশ্ব কাতারের পাশে অটলভাবে রয়েছে।’
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তিনি দোহায় ওআইসি-আরব লীগ ব্যতিক্রমী সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেন, তেল আবিব কর্তৃক হামাসের আলোচনা দলের ওপর কাতারে চালানো হামলা ‘ইসরায়েলের দস্যুতার নতুন মাত্রা।’
এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা এমন এক সন্ত্রাসী মানসিকতার মুখোমুখি, যারা রক্ত ও বিশৃঙ্খলার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে এবং তা একটি রাষ্ট্রের রূপ ধারণ করেছে।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলের নেতানিয়াহু সরকার ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়। দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে, বিশেষ করে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে।
এরদোয়ান আরও বলেন, ইসলামী বিশ্বে ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী স্বপ্ন রুখে দেওয়ার সক্ষমতা ও সামর্থ্য রয়েছে। আর এজন্য ইসরায়েলকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে হবে।
তিনি জানান, তুরস্ক ১৯৬৭ সালের সীমারেখা ভিত্তিক পূর্ণ আকারের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। রাষ্ট্রটির রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
কাতারকে তুরস্কের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভাইয়ের মতো মিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, আঙ্কারা তার প্রতিরক্ষা শিল্পের সক্ষমতা বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা আরও জোরদার করতে হবে, যেন আগামী দশকে বিজয় অর্জন করতে পারি।’
এরদোয়ান আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়া সক্রিয় করে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী মানসিকতা জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করছে। এছাড়া তারা পার পেয়ে যাচ্ছে বলেই এসব অপরাধ করে চলেছে।’
তিনি আরও বলেন, কিছু ইসরায়েলি রাজনীতিক নির্লজ্জভাবে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গঠনের স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছে, যা আরও বিপজ্জনক।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যা মামলার প্রতি সমর্থন জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, অঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় ওআইসি-সহ অন্যান্য ইসলামি সংগঠনের মাধ্যমে যৌথ পদক্ষেপ ও বাস্তবমুখী ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে।
শেষে তিনি বলেন, গণহত্যা, দেশান্তর ও বিভাজন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই সম্মেলনের সিদ্ধান্তসমূহ ইসরায়েলি হুমকি মোকাবিলায় কার্যকর নতুন পদক্ষেপে রূপান্তরিত হবে এবং এর বাস্তবায়ন কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।