তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহী চীন, দেশে আসছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (১৬ সেপ্টেম্বর) : চীনের সহযোগিতায় বহুল আলোচিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে শিগগিরই বাংলাদেশে আসছে চীনের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে প্রায় ৫৫ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রকল্পটির আর্থিক কাঠামোর বাকি অংশ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হবে। তিস্তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫ কোটি ডলার।
চীনের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সঙ্গে ইতোমধ্যে চীন কাজ শুরু করেছে।
২০২৪ সালের মার্চে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে নতুন করে উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় মে মাসে পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দিয়ে তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণের বিষয়টি জানায়। জুলাইয়ে ইআরডি চীনা দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়ে ঋণচাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করে। বাংলাদেশ সরকার চলতি বছরের মধ্যেই চীনের সঙ্গে আর্থিক চুক্তি সই করতে চায়।
তিস্তা প্রকল্পে অতীতে ভারত ও চীনের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। ২০২৪ সালের মে মাসে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়েত্রা বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানান। তখনকার সরকারও চাইত, ভারত প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করুক।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৬ সাল থেকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়ে ২০২৯ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। চীনের ঋণ পাওয়া গেলে প্রকল্পের আর্থিক কাঠামো নিশ্চিত হবে বলে আশা করছে সরকার।
চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি, চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্প, এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিন পিংয়ের ‘বৈশ্বিক সুশাসন উদ্যোগ’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত দাবি করেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৮০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা বর্তমানে সর্বোচ্চ।