সাংবাদিকের বেতন ন্যূনতম ৩৫ হাজার করার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (১৪ সেপ্টেম্বর) : গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকর করা, সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং অবিলম্বে ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তারা।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ, পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব দাবি উঠে আসে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিআরইউ ও জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “কমিশনের প্রতিবেদনে কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব থাকলেও, যেগুলো অসংগতিপূর্ণ বা বাস্তবতা বিবর্জিত, তা অবশ্যই সমালোচনার দাবি রাখে।”

তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সংক্রান্ত শাস্তির বিধান বাতিলের সুপারিশের বিরোধিতা করে বলেন, “এই বিধান সহিংসতা রোধে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”

শফিকুল আলম আরও বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতির সঙ্গে একমত। এটি বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।” তিনি সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার দায় মালিকপক্ষকে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা এবং প্রয়োজনে মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান চালুর প্রস্তাব দেন।

মিডিয়া লাইসেন্সের জন্য অনলাইন, প্রিন্ট ও টেলিভিশন মাধ্যমে যথাক্রমে ১০-১৫ কোটি, ২০ কোটি ও ২৫ কোটি টাকা সিকিউরিটি মানি জমা রাখার প্রস্তাব দেন তিনি। যা সংকটকালে সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলেও মত দেন।

ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, “সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে নিজেদেরই সক্রিয় হতে হবে। এখনও অনেক সাংবাদিক মবের শিকার হচ্ছেন, মিডিয়ার কাঠামোতেও বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি।”

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ বলেন, “ডিআরইউ, প্রেস ক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনকেও সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। পাশাপাশি প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য ভাতা চালু করা প্রয়োজন।”

বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, “গণমাধ্যম কমিশনের প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও সত্যের ঘাটতি রয়েছে। এ রিপোর্ট পুনর্বিবেচনা করা আবশ্যক।”

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও রফিকুল ইসলাম আজাদ ইউনিটির প্রতিনিধি কমিশনে অন্তর্ভুক্তি এবং সাংবাদিকদের জন্য আলাদা হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ভূঁইয়া বলেন, “টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়াকেও ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনতে হবে।”

ঢাকা মেইল ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল সপ্তাহে দুই দিন সাংবাদিকদের ছুটির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

ডিআরইউ সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার সাংবাদিকদের হত্যা ও নির্যাতনের বিচারের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের দাবি জানান।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মাইনুল হাসান সোহেল, মোতাহার হোসেন মাসুম, মসিউর রহমান খান, মাহমুদুর হাসান, দিদারুল আলম ও হাফিজুল ইসলাম।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ