চোখের জলে শেষবিদায় দেয়া হলো প্রিয় শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসকে

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (১২ সেপ্টেম্বর) : চোখের জলে বিদায় জানানো হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসকে। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের সামনে

লাশবাহী গাড়িটি ঘিরে জটলা করে আছেন অনেকে। কেউ শোকে পাথর হয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ নিজেকে সামলাতে না পেরে উচ্চ স্বরে কাঁদছেন, কেউ আবার সান্ত্বনা দিচ্ছেন অন্যজনকে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের সামনে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

লাশবাহী গাড়িতে করে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের (৩২) মরদেহ আনা হয়েছে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। পরে একই বিভাগের শিক্ষক হন। আজ সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনার কাজে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

আজ দুপুরে পুরাতন কলাভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, লাশবাহী গাড়িতে করে আনা হয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌসের মরদেহ। সহকর্মী, শিক্ষক কিংবা প্রিয় বন্ধুকে শেষবারের মতো দেখতে সেখানে ভিড় করেছেন অনেকেই। সহকর্মীর অকালপ্রয়াণে বাকরুদ্ধ হয়ে বিভাগের অন্য শিক্ষকেরা দাঁড়িয়ে আছেন নিশ্চুপ। বেলা সোয়া একটার দিকে লাশবাহী গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।


প্রিয় শিক্ষক, সহকর্মী কিংবা বন্ধুর এমন মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। যে শিক্ষকের সঙ্গে নিয়মিত নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতেন, নানা সমস্যার কথা বলতেন অকপটে; আজ তাঁর নিথর উপস্থিতি কেউই মানতে পারছেন না। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীদের অনেকেই। তাঁদের কেউ কেউ জানান, শিক্ষক হলেও জান্নাতুলকে বোনের মতো মনে করতেন তাঁরা।

বিভাগটির ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ঐশী সরকার বলেন, ‘তিনি এমন একজন শিক্ষক ছিলেন, যাঁর কাছে অকপটে সবকিছু বলা যেত। শিক্ষক হলেও তিনি ছিলেন বোনের মতো। শিক্ষার্থীবান্ধব এমন একজন শিক্ষককে অকালে হারাতে হবে, কখনো ভাবতেই পারিনি।’

চারুকলা বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী উজ্জ্বল হোসেন রাজা বলেন, ‘তিনি (জান্নাতুল) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এরপর শিক্ষক হয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য হয়ে ওঠেন নিবেদিতপ্রাণ। গতকালও আমাকে ফোন দিয়ে এক শিক্ষার্থীর জন্য টিউশনির ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করেছিলেন।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ