সমুদ্রসীমা নির্ধারণে দুই দেশই লাভবান

Abul Hasan Mahmud Ali আবুল হাসান মাহমুদ আলীরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলে এবং এর বাইরে মহীসোপান অঞ্চলে বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ ও সার্বভৌম অধিকার নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সমুদ্রসীমা নির্ধারণী মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধপূর্ণ এলাকা ছিল প্রায় ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার। এ এলাকার ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশ পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রায় পর্যালোচনায় উভয় রাষ্ট্রের জন্য বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। এ বিজয় বন্ধুত্বের বিজয়, বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ মানুষের বিজয়।

তিনি জানান, রায়ের ফলে শেষ পর্যন্ত এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সবধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায় আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।

নেদারল্যান্ডসের স্থায়ী সালিসি আদালত (পার্মানেন্ট কোর্ট অব আর্বিট্রেশন-পিসিএ) গতকাল সোমবার (৭ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের কপি গতকাল দুপুরেই বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু আদালতের কার্যবিধি অনুযায়ী রায়টি ৮ জুলাইয়ের আগে জনসমক্ষে প্রকাশ করার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা ছিল। রায়ের বিস্তারিত আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করা হয়।
আদালতের কার্যবিধি অনুযায়ী, গত জুন মাসে রায় ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু তা বিলম্বিত হয়।

নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অবস্থিত স্থায়ী সালিসি আদালতে ২০১৩ সালের ৯ থেকে ১৮ ডিসেম্বর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পক্ষে বাংলাদেশ ও ভারত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। শুনানি শেষে আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, কার্যবিধির ১৫ ধারা অনুযায়ী, ছয় মাস পর এই দুই নিকট প্রতিবেশীর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায় দেওয়া হবে।

তিন দশকের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গভিত্তিক সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) মামলা করেছিল। ২০১২ সালের ১৫ মার্চ ইটলস বাংলাদেশের পক্ষে রায় দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ