সৌদিকে খুশি করতে প্রতিবেদন গোপন করছেন মে !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সন্ত্রাসবাদে বিদেশি অর্থায়ন-সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন গোপন রেখে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

অভিযোগ উঠেছে, ওই তদন্ত প্রতিবেদনে সৌদি আরব সম্পর্কে স্পর্শকাতর তথ্য রয়েছে। যে কারণে সরকার দেশটিকে খুশি রাখতে এ প্রতিবেদন গোপন করছে।

গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রিন পার্টির সহকারী নেতা (কো লিডার) ক্যারোলাইন লুকাস শিগগিরই ওই তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের জন্য থেরেসা মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পার্লামেন্টে এক লিখিত প্রশ্নে ক্যারোলাইন লুকাস দাবি তুলেছেন, কার কোন পরামর্শে এই প্রতিবেদন এত দিন গোপন রাখা হলো, তা-ও যেন সরকার প্রকাশ করে।

২০১৫ সালে ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যে কনজারভেটিভ-লিবারেল ডেমোক্র্যাটস (লিবডেম) জোট তখন ক্ষমতায়। সে সময় সিরিয়ায় বোমা হামলায় যুক্তরাজ্যের যোগ দেওয়া নিয়ে সংসদে ভোটাভুটি হয়। যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসবাদে বিদেশি অর্থায়ন বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের বিনিময়ে কনজারভেটিভ পার্টির বোমা হামলার প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়েছিল লিবডেম। এ কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন ওই তদন্তের নির্দেশ দেন। এক বছরের মধ্যে ওই তদন্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর জমা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

লিমডেম এখন আর ক্ষমতায় নেই। তবে দলটির নেতা টিম ফ্যারন প্রতিবেদন প্রকাশ না করার বিষয়টিকে ওয়াদার বরখেলাপ বলে মন্তব্য করেছেন।

ক্যারোলাইন লুকাসের অনুসন্ধানের জবাবে গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হয়। ওই তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসবাদের ধরন, প্রকৃতি এবং ইসলামিক উগ্রবাদে অর্থায়নের বিষয়ে সরকারের বোধের উন্নতি ঘটিয়েছে। এটি প্রকাশ করা হবে কি না, তা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিষয়।

প্রতিবেদন গোপন করার বিষয়টিকে ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করে কূটনৈতিক কারণে এ প্রতিবেদন গোপন রাখা হচ্ছে কি না, তা খোলাসা করার আহ্বান জানিয়েছেন ক্যারোলাইন।

গত ৮ জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের আগে আগে ম্যানচেস্টার ও লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা এ প্রতিবেদন প্রকাশ না করার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে। লেবার নেতা জেরেমি করবিনসহ প্রধান বিরোধী দলগুলোর নেতারা অভিযোগ করেন, কনজারভেটিভ সরকার জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে সৌদি আরবের বিতর্কিত একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে সখ্যকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের জন্য অব্যাহতভাবে আহ্বান জানিয়ে আসছেন জেরেমি করবিন। গত শনিবার আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করবিন ইয়েমেনে সৌদি আরবের হামলাকে ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সৌদি আরবের অর্থায়নে যুক্তরাজ্যে ইসলামিক উগ্রবাদ মাথা গজাচ্ছে। আর অস্ত্র বিক্রিসহ নানা বাণিজ্যিক স্বার্থে যুক্তরাজ্য সরকার এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

Leave a Reply

Facebook
%d bloggers like this:
ব্রেকিং নিউজ